,

নবীগঞ্জে দালালের ফাঁদে পড়ে প্রতারনার শিকার কুতুব উদ্দিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে দালালের ফাঁদে পরে স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যাওয়া হলো না কুতুব উদ্দিনের। ভিটে বাড়ি বিক্রি করে ৪ লক্ষ টাকা নিয়ে দুই সহোদর দালাল সবুজ মিয়া ও আবুল মিয়ার প্রতারনার শিকার নিরীহ কুতুব উদ্দিন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। কুতুব উদ্দিন উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের মৃত আমীর উদ্দিনের ছেলে। বিচারের জন্য সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রতারক সবুজ মিয়া ও তার ভাই আবুল মিয়া কুতুব উদ্দিনের পাসপোর্টে মালদ্বিপ ও সিঙ্গাপুর ভ্রমনের জাল ভিসার সীল ব্যবহার করে আমেরিকা এ্যাম্বেসিতে কুতুব উদ্দিনের পাসপোর্ট ভিজিট ভিসার জন্য জমা দেন। ২৮ জুলাই এ্যাম্বেসিতে ইন্টারভিউ দেয়ার সময় কর্তৃপক্ষের নিকট জাল ভিসা সীল ধরা পড়ে। যা কুতুব উদ্দিন পুর্বে
অবগত ছিলেন না। এ সময় এ্যাম্বেসি কর্তৃপক্ষ কুতুব উদ্দিনকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশে সোর্পদ করেন। এ ব্যাপারে আমেরিকা এ্যাম্বেসির সিকিউরিটি ইনচার্জ মাইকেল লী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় কৌশলে বেচেঁ যান মুল প্রতারক এবং কুতুব উদ্দিনের পাসপোর্টে জাল ভিসার সীল ব্যবহারকারী সবুজ মিয়া ও তার ভাই আবুল মিয়া। দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর কুতুব উদ্দিন জামিনে এসে প্রতারক দুই সহোদরসহ সমাজপতিদের নিকট ধর্ণা দিয়েও কোন সমাধান পাচ্ছেন না।
সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাশডর (দেবপাড়া) গ্রামের মৃত জাহির আলীর ছেলে সবুজ মিয়া ও আবুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে আদম ব্যবসার সাথে জড়িত। জালজালিয়াতির মাধ্যমে লোকজনকে প্রবাসে না পাটিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভিজিট ভিসা’র জাল সীল স্বাক্ষর দিয়ে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনিভাবে প্রতারনার শিকার সহজ সরল কুতুব উদ্দিন। তাদের প্রতারনার ফাদেঁ পড়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন কুতুব উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন যুবক। তিনি স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যাওয়ার জন্য বাশডর (দেবপাড়া) গ্রামের সবুজ মিয়া ও আবুল মিয়ার সাথে আত্বীয়তার সুবাদে যোগাযোগ করেন। প্রতারক সবুজ মিয়া কুতুব উদ্দিনকে জানায়, আমেরিকা এ্যাম্বেসীতে তাদের সখ্যতা রয়েছে। ৩ মাসের মধ্যে আমেরিকার ভিজিট ভিসা বের করে দিবে। এমন আশ^াসে সরল বিশ^াসে অসহায় কুতুব উদ্দিন ৮ লক্ষ টাকা কন্টাক করেন। এতে ২৫/০২/২০২২ইং তারিখে কুতুব উদ্দিনের বাড়ি থেকে নগদ ৪ লক্ষ টাকা ও পাসপোর্ট আনেন সবুজ মিয়া। পাসপোর্ট ও টাকা নেয়ার পর আমেরিকা ভিজিট ভিসার প্রসেসিং করে দুই সহোদর। আমেরিকা এ্যাম্বেসিতে আবেদনও করা হয়েছে। ইন্টারভিউর তারিখের সময় এ্যাম্বেসিতে উপস্থিত থাকতে হবে। বিগত ২৮ জুলাই ২০২২ইং তারিখে আমেরিকা এ্যাম্বেসিতে ইন্টারভিউতে অংশ নেন কুতুব উদ্দিন। তখনই ধরা পড়ে কুতুব উদ্দিনের পাসপোর্টে মালদ্বিপ ও সিঙ্গাপুরের ভিজিট ভিসার সীল স্বাক্ষর জাল। কুতুব উদ্দিন এ্যাম্বেসিকে জানান উক্ত দুই দেশের ভিসার সীল ও স্বাক্ষরের ব্যাপারে তিনি অবগত নন। দালাল সবুজ ও আবুল মিয়ার কাছে তার পাসপোর্ট জমা ছিল আমেরিকা এ্যাম্বেসিতে আবেদন করার জন্য। এ সময় কুতুব উদ্দিন একাধিকবার এই দুই প্রতারকের নম্বারে ফোন দিলেও সুইচ অফ পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে কুতুব উদ্দিনকে গুলশান থানা পুলিশে সোর্পদ করে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রাপ্ত সুত্রে জানাগেছে, এ রকম জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অনেক নিরীহ মানুষের সাথে প্রতারনা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সবুজ ও আবুল। এদিকে উক্ত আবুল মিয়া অতি সম্প্রতি আমেরিকা পাড়ি দেয়। ১ মাস সেখানে থেকে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন। প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে লোকদের বিদেশ পাঠানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের আখের গোচাচ্ছে। এলাকাবাসী কুতুব উদ্দিনের পাসপোর্টে জাল ভিসার সীল ও স্বাক্ষর প্রস্তুকারী সবুজ মিয়া ও আবুল মিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট।


     এই বিভাগের আরো খবর